এভাবেও ফিরে আসা যায়, দেওয়া যায় এক পশলা ভালোবাসা
প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২২ ১৫:৪৮

মশিউর রহমান শাওন: পৃথিবীর একমাত্র জাতি আমরা যারা খেলার প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসা কিংবা সমালোচনার প্রেমিক হওয়ায় মাঝেমধ্যে ভুলে যাই বাইশ গজের লড়াইয়ে ঐ লাল সবুজের পতাকা বহনকারীরাও এক একজন মানুষ৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অতিরিক্ত বিশ্লেষণে হরহামেশাই তাদেরকে মনে হয় জাহেলিয়া যুগের কৃতদাসের মত৷ যাদের নেই নিজস্ব কোন প্রশান্তি, নেই ভালোলাগার অন্যকিছু ৷ তবে দিন শেষে তাদের পরিচয় মানুষ, তাদের রয়েছে পরিবার-পরিজন, আছে প্রিয়তমা৷
ভালো খেললে দলে জায়গা থাকবে, খারাপ খেললে শক্ত মাটি কিছুটা আলগা হবে, বাদ পড়তে হবে দল থেকে, ফিরে এসে লেখা যাবে রূপকথার গল্প৷ এসব বাস্তবতা লিটনদের চেয়ে কেই বা বেশি বুঝে৷ দুঃসময় আসবে, বিপর্যয় দেখা দিবে প্রকট ভাবে কিন্তু ভেঙ্গে পড়ার কোন সুযোগ থাকবে না, মাথা উঁচু করতে হবে৷ যে ব্যাট কথা শুনে নাই, যার কারনে বাদ পড়তে হয় দল থেকে সেই ব্যাট দিয়ে আঘাতের বিপরীতে রানের ফোয়ারা বয়ে দিতে হবে৷ যারা ডিসকাউন্ট নিয়ে মজার ষোলকলা পূর্ণ করেছে তাদের জবাবটা দিতে হবে ভালোবাসা দিয়ে৷ প্রিয়তমা স্ত্রী যখন দুঃসময়ে প্রতিবাদ করেছিল, হয়তো চুপিসারে কেঁদেছিল সেই মানুষটাকে এনে দিতে হবে অফুরন্ত সম্মান৷
যেদিন জাতীয় দলের হয়ে লিটন দাসের অভিষেক হয় সেদিন দেশের ক্রিকেটের পরিচিত মুখ নাজমুল আবেদীন ফাহিমের ফেসবুক পোষ্ট ছিল, ''এসেছে বাংলাদেশের ভবিষ্যত তারকা''৷ নিখুঁত বিশ্লেষণ প্রমাণ হয়েছে মাঠের লড়াইয়ে৷ বিশ্বকাপের পর দল থেকে বাদ পড়া ছেলেটি এখন সতেরো কোটি মানুষের এক বিশাল স্বপ্ন৷ যারা ভুল করে তা স্বীকার করতে পরিপক্ক তারা হয়তো ট্রলের জন্য ক্ষমা চায় দূর থেকে৷ যারা সমালোচনা করতে ভালোবাসে তারা হয়তো সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে৷ তবে লিটন দুই পক্ষের জন্য মলিন হাসিতে রেখে দিয়েছেন উত্তর৷ 'সবাই চায় আমি ভালো খেলি৷ রান করলে প্রশংসা হবে, খারাপ করলে সমালোচনা হবে, তবে এসব এ আমাকে স্পর্শ করে না"৷
লিটন দাস কি কারনে সবার ভালোবাসার পাত্র হয়ে উঠেছে তা নিয়ে যদিও আলোচনার প্রয়োজন নেই, তবুও যদি করার জন্য করতেই হয় তা পরে করলে আলোচনা কিছুটা ভিন্ন পথে নিয়ে যাওয়া যাবে৷ যে বিচিত্র পথে গল্পের আসরে নায়কের আসনে অবশ্যই থাকবেন বাংলার বিরাট কোহলি৷
লিটন দাস ও বেন স্টোকসের মাঝে এক দূর্দান্ত মিল রয়েছে৷ দুজনেই দেখেছেন ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ারের সবচেয়ে খারাপ সময়, যা কখনো কারও কামনায় থাকে না৷ ২০১৬ সালের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের বিশ্বকাপে দলকে হারানো স্টোকস দলকে জিতিয়েছেন আরেক বিশ্বকাপ৷ সেদিনের মাটিতে লুটিয়ে পরে কান্না দেখেছে পুরো দুনিয়া৷ তেমনি ২০২১ সালে শেষ পর্যন্ত দলকে জেতাতে ব্যর্থ লিটনের ব্যাট ফেলে দেওয়ার দৃশ্য নিশ্চই ভাসসে পুরো ক্রিকেট প্রেমীর মায়াবি চোখে৷ একই তাসকিনের কান্না হয়তো ভুলে গেছে অনেকে তবে মনে রাখতে হবে লিটনের আক্ষেপ৷ কারন খুব কাছে গিয়ে হতে হয়েছে পুরো দেশের কাছে খলনায়ক৷
মাঠের লড়াইয়ে বড্ড অধারাবাহিক হওয়া লিটন এখন সবচেয়ে ধারাবাহিক৷ চলতি বছর তিন সংস্করণ মিলে রান সংগ্রাহকের তালিকায় সবার উপরে রয়েছেন এই ব্যাটার৷ সাদা পোষাকে অবস্থান জো রুটের পরেই৷
একদিকে ব্যাটে ছিল না রান, ক্যাচ মিসে দলকে হারানোর মত অপরাধ নিজ কাঁধে নিতে হয়েছে বাধ্য হয়ে, ডিসকাউন্টে যতটা লজ্জা দেওয়া যায় নিজ দেশের মানুষেরাই করেছে তার সর্বোচ্চটা৷ হয়তো পুরুষ জন্য কাঁদতে পারেনি প্রকাশ্যে৷ তবে তার নিরব কান্না কতটা শক্তিশালী তা বুঝেছে বর্তমান সময়ে প্রতিপক্ষরা৷ নিউজিল্যান্ডে শতক হাকানোর পর ঘরের মাঠে দলকে টেনে তুলেছেন ধ্বংসস্তুপ থেকে৷ বিজয় উৎযাপনে হয়তো সকলের পানে তাকিয়ে বলেছেন আমি তোমাদের লোক, আমাকে ছুঁড়ে ফেলিও না৷ ভালোবাসতে হবে না আমাকে, তবে আমার দেওয়া ভালোবাসা নিও তোমরা৷
ভালো খেললে প্রশংসা হবে, খারাপ করলে সমালোচনা৷ অলি-গলি থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রাম বাংলায় টংয়ের দোকান থেকে শুরু করে চাকচিক্যের ফেসবুকে ঘটে যাবে অনেককিছুই৷ তবে কোন কিছুই অতিরিক্ত ভালো নয়৷ খুব বেশি প্রশংসার কারনে যেমন হতে পারে লাইনচ্যুত, তেমনি সমালোচন মাত্রা যখন অপমানে পরিণত হবে তখন বুঝতে হবে অসুস্থ মস্তিস্কে মানসিকভাবে হত্যা করা হচ্ছে আরেকজনকে৷ তাই করত হবে গঠনমূলক সমালোচন৷ যাতে করে লাল সবুজের ঐ পতাকা অল্প বাতাসেও নিজেকে ডানা ঝাপটানো পাখির মত পরিচালনা করতে পারে এই ভেবে যারা তাকে বহন করে তারা সর্বোচ্চ সম্মান পায়৷
-নট আউট/এমআরএস
তিন পান্ডবের পাঁচ সেঞ্চুরি, ইমপ্যাক্টে এগিয়ে.....
বিশ্বকাপে ২৯ ম্যাচ খেলা সাকিবের রান ১১৪৬৷ ২৯ ম্যাচে মুশফিকের ৮৭৭ রান৷ এই রান নিয়ে রয়ে...

৬, ৬, ৬, ৬, ৬—‘রিংকু সিং’ হ্যাভ ডান ইট!
শেষ ওভারে এমন খুনে ব্যাটিং এর আগে কেউ দেখেনি বোধহয়।

এবার মাদিবার রাষ্ট্রে হোক সাম্রাজ্য উদ্ধার
২০২০ সালের পরের ব্যাচ ট্রফি ধরে রাখার কাজটি করতে পারেনি। তবে এবার সাম্রাজ্য উদ্ধারের...

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: