03/15/2025 ৩৫ ডলারে চাকরি করা ছেলে এখন ভারতের সম্পদ
নট আউট ডেস্ক
৫ মে ২০২২ ২০:০২
নট আউট ডেস্কঃ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) চোখের পলকে লাখপতি হয়ে যান ক্রিকেটাররা। এই পর্যন্ত আসতে কতটা সংগ্রাম করতে হয়, সেই গল্প শোনা যায় কারও কারও মুখে। এমনই এক জীবন সং।গ্রামের কথা বললেন গত আসরের পার্পল ক্যাপ জয়ী হার্শাল প্যাটেল
গত আইপিএলে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের জার্সিতে ৩২ উইকেট নেওয়া এই পেসারকে এবারের নিলামে পৌনে এক কোটি রুপিতে ফিরিয়ে এনেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। গতবারের দারুণ পারফরম্যান্সে ভারতের জাতীয় দলেও অভিষেক হয় তার। কিন্তু গুজরাট থেকে উঠে আসা এই মিডিয়াম পেসারের জীবন মসৃণ ছিল না।
প্রখ্যাত ক্রিকেট সঞ্চালক গৌরব কাপুরের শো ‘ব্রেকফাস্ট উইথ চ্যাম্পিয়নস’ এ আলাপচারিতায় হার্শাল যুক্তরাষ্ট্রে থাকার সময় তার সংগ্রামের কথা জানালেন। সেখানে একটি পারফিউমের দোকানে কাজ করতেন, প্রতিদিনের উপার্জন ছিল মাত্র ৩৫ ডলার। দোকানটি ছিল এক পাকিস্তানি ব্যক্তির।
৩১ বছর বয়সী পেসার বলেছেন, ‘নিউ জার্সিতে এলিজাবেথে একজন পাকিস্তানির পারফিউমের দোকানে কাজ করতাম। গুজরাটের মাঝারি মানের স্কুলে পড়াশোনা ছিল বলে ইংরেজিতে কথা বলতে পারতাম না। ভাষা নিয়ে ওই সময়ই প্রথম সমস্যায় পড়েছিলাম এবং অনেক অশালীন ভাষার ব্যবহার হতো, কারণ এলাকাটি ছিল লাতিনো ও আফ্রিকান আমেরিকানের।’
হার্শাল বলতে থাকলেন, ‘তারপর তাদের ইংরেজি কিছুটা বুঝতে চেষ্টা করলাম। তারা শুক্রবারে আসত এবং ১০০ ডলারে পারফিউম কিনত। সোমবার তার ফিরে এসে বলতো, ‘এই যে আমি অল্প কয়েকবার স্প্রে করেছি। এখন এটা ফেরত দিতে চাই। টেবিলে আমার কোনো খাবার নেই।’ এসব ছিল নিয়মিত ব্যাপার। এটা ছিল আমার জন্য দারুণ অভিজ্ঞতাা কারণ আমি শিখেছি ক্ষুদ্র শ্রমিকের মতো কাজগুলো আসলে কেমন হয়। সকাল ৭টায় দোকানের সামনে নামিয়ে দিতো এবং দোকান খুলতো সকাল ৯টায়। এই দুই ঘণ্টা এলিজাবেথ রেলস্টেশনে বসে থাকতাম। কাজ করতাম সাড়ে ৭টা, ৮টা পর্যন্ত। মানে দিনে ১২-১৩ ঘণ্টা ধরে কাজ করেও পেতাম মাত্র ৩৫ ডলার করে।’
গুজরাটে জুনিয়র ক্রিকেট খেলতেন হার্শাল এবং বুঝে যান যে ভালো কিছু করতে পারবেন। বাবা-মাকে বুঝিয়ে তিনি চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে এবং স্বপ্ন দেখতে থাকেন ক্রিকেটার হওয়ার, ‘আমি জুনিয়র ক্রিকেট খেলতাম। তারা (বাবা-মা) আমার ওপর আস্থা রেখেছিল। আমার বাবা মা বলেছিল ‘এমন কিছু করো না, যেটা আমাদের পরিস্থিতি খারাপ করে ফেলে।’ আমি সেটা অন্তর দিয়ে গ্রহণ করেছিলাম। মোতেরায় ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত অনুশীলন করতাম। ওখানে একটা স্যান্ডউইচের দোকান ছিল। আলু-মটর স্যান্ডউইচ, ভেজিটেবল স্যান্ডউইচ। টোস্ট করা স্যান্ডউইচ খেতাম না, কারণ দাম ছিল অনেক। আলু-মটর ও ভেজিটেবলের দাম ছিল ৭ রুপি, টোস্ট ছিল ১৫ রুপি।’
এই আসরে এখন পর্যন্ত ১০ উইকেট নিয়েছেন হার্শাল।
-নট আউট/এমআরএস