03/13/2025 উইন্ডিজের বিপক্ষে সাদা পোষাকে স্বস্তি নেই বাংলাদেশের
নিজস্ব প্রতিবেদক
৩১ মে ২০২২ ০১:০৫
নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী মাসে উইন্ডিজ সফরে যাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল৷ এবারের সফরে থাকছে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ৷ ২ টেস্টের পাশাপাশি ৩ ওয়ানডে ও ৩ টি-টুয়েন্টি খেলবে দুই দল৷ সফরকে সামনে রেখে সাদা পোষাকে উন্ডিজের বিপক্ষে চোখ বুলানো যাক টাইগারদের পরিসংখ্যান৷
বাংলাদেশ- উইন্ডিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় ২০০২ সালের ডিসেম্বরে৷ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশর পরাজয় ব্যবধান ছিল ২-০৷ মাঝের এই দীর্ঘ সময়ে দুই দলের ৯ সিরিজে উইন্ডিজ এগিয়ে ৭-২ ব্যবধানে৷ অর্থ্যাৎ উইন্ডিজ জিতেছে ৭ সিরিজ অপরদিকে বাংলাদেশ সাফল্য ২ সিরিজ৷
প্রথম সিরিজ থেকে সর্বশেষ সিরিজ পর্যন্ত কেটে গেছে প্রায় দুই দশক৷ ৯ সিরিজের ১৮ ম্যাচের পরিসংখ্যানের বিচারে বাংলাদেশের চেয়ে সফলতার পাল্লা সমৃদ্ধ উইন্ডিজের৷ দুই দলের খেলা ১৮ ম্যাচে বাংলাদোশর জয় মোটে ৪ টি৷ এসময় ড্র হয়েছে ২ ম্যাচ৷ অপরদিকে উইন্ডিজ বিজয়ের উৎযাপন করেছেন ১২ ম্যাচে৷ তবে স্বস্তির খবর বাংলাদেশের চার জয়ের শেষ দুইটি এসেছে সর্বশেষ চার ম্যাচে৷ স্বস্তির সাথে কষ্টও আছে কিছুটা৷ সর্বশেষ সিরিজে ঘরের মাঠে খুব কাছে গিয়েও হয়নি জয়ের স্বাদ নেওয়া৷
ইনিংস ব্যবধান কিংবা ১০ উইকেটে জয়ের পরিসংখ্যানেও এগিয়ে উইন্ডিজ৷ বাংলাদেশ তাদের ১০ উইকেটে হারাতে না পারলেও একবার হারিয়েছে ইনিংস ব্যবধানে৷ সেটি অবশ্য চার বছর আগের ঘটনা৷ ২০১৮ সালে মিরপুরে এমন ইতিহাস রচনা করেছিল সাকিব-মুশফিকরা৷ অপরদিকে উইন্ডিজ বাংলাদেশের বিপক্ষে দশ উইকেটে দুইবার ও ইনিংস ব্যবধানে জিতেছে ৩ বার৷
বাংলাদেশের বিপক্ষে উইন্ডিজের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ৬৪৮৷ অপরদিকে বাংলাদেশ করেছিল এক বার ৫৫৬৷ উইন্ডিজকে ১১১ রানে অলআউট করে লজ্জা দিলেও বাংলাদেশর লজ্জা আরও গভীর৷ দলটির বিপক্ষে সর্বনিম্ন রান মাত্র ৪৩৷
ম্যাচ কিংবা সিরিজ জয়ের ব্যবধানে বাংলাদেশের পরিসংখ্যান মলিন হলেও রান ও উইকেটে সমান তালে মধুর লড়াই রয়েছে দুই দলের খেলোয়াড়দের৷ বেশ কিছু ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে টাইগাররা৷
বাংলাদেশ ও উইন্ডিজ দলের মধ্যকার লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান শিবনারাইন চন্দ্রপলের৷ ২০০২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১০ ম্যাচের ১৪ ইনিংসে এই ব্যাটারের ঝুলিতে রয়েছে ৮৯৭ রান৷ তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে অবশ্য রয়েছেন টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল৷ ১২ ম্যাচের ২৪ ইনিংসে তামিমের সংগ্রহ ৮৫৩ রান৷ আসন্ন সিরিজে ৪৫ রান করতে পারলেই কিংবদন্তি চন্দ্রপলকে পেছনে ফেলবেন এই বাম হাতি ব্যাটার৷
দুই দলের ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ শতক হাকিয়েছেন চন্দ্রপল৷ ৪ সেঞ্চুরিতে রয়েছেন সবার উপরে৷ বাংলাদেশিদের মধ্যে ২ শতক নিয়ে প্রথমে রয়েছেন টেস্ট অধিনায়ক মুমিমুন হক৷
এক ইনিংসে ব্যক্তিগত রানের বিচারে অবশ্য অনেকটাই পিছিয়ে টাইগার ব্যাটাররা৷ ২৬১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে প্রথমে রয়েছেন রর সর্বন৷ বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানানো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ৷ তিনি করেছিলেন ১৩৬ রান৷
ব্যাটারদের যেমন রান করাতে শান্তি, বোলারদের বেলায় উইকেট পাওয়া প্রশান্তির৷ দুই দলের বোলারদের মধ্যে উইকেটে বিচারে এগিয়ে টাইগার বোলার, স্পষ্ট করে বললে যার অর্থ দাঁড়াবে স্পিনাররা৷
এই দুই দলের টেস্ট ক্রিকেটে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ উইকেট মেহেদি হাসান মিরাজের৷ অফ স্পিনিং অলরাউন্ডারের ঝুলিতে রয়েছে ৭ উইকেট৷ ৬ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় উইন্ডিজের জিসি লাউসন৷
এক ম্যাচের বিচারেও এগিয়ে টাইগার বোলাররা৷ ১২ উইকেট নিয়ে সবার উপরে মিরাজ, অপরদিকে ১১ উইকেট নিয়েছিলেন জেসন হোল্ডার৷
ক্রিকেটে পাঁচ উইকেট নেওয়া যেমন সম্মানের, তেমনি প্রাপ্তির৷ টেস্ট সংস্করণে পাঁচ উইকেট আরও আনন্দের৷ এখন পর্যন্ত দুই দলের বোলাররা মিলে ৩১ উইকেট পেয়েছেন ৩১ বার৷ যেখানে বাংলাদেশী বোলররা নিয়েছেন ১২ বার, উইন্ডিজের বেলায় বিয়োজনের হিসেবে সংখ্যাটি ১৯৷
দুই দলের টেস্ট মোকাবেলায় সর্বোচ্চ উইকেট সাকিব আল হাসানের৷ ১১ ম্যাচে এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার নিয়েছেন ৪৬ উইকেট৷ উইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৪ উইকেট নিয়েছেন কেমার রোচ৷
এক ম্যাচে দশ উইকেট নেওয়ার কীর্তি রয়েছে শুধুমাত্র দুজনের৷ বাংলাদেশের মেহেদি হাসান মিরাজ ও উইন্ডিজের জেসন হোল্ডারের৷ এক সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার বেলাতে এ দুজনের খুব বেশি পার্থক্য নেই৷ হোল্ডারের ১৬ উইকেটের বিপরীতে মিরাজের সংগ্রহ ১৫ উইকেট৷
সর্বশেষ দুই টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশর ব্যর্থতা সর্বোচ্চ পর্যায়ের হলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দীর্ঘসময় বিস্তার করার অভিজ্ঞতায় ঘুরে দাঁড়ানোর যথেষ্ঠ সক্ষমতা রাখে টিম টাইগার৷ পরের মাটিতে আরেকবার ভালো করবে এমন আশা করলে মোটেও ভুল হবে না৷ প্রশংসা হোক নিয়ন্ত্রিত, সমালোচনা হোক গঠনমূলক৷ তবেই সুন্দর পরিসংখ্যান আসবে খুব দ্রুত৷
-নট আউট/এমআরএস