নট আউট ডেস্কঃ সফরকারী শ্রীলঙ্কাকে ৩৬ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল স্বাগতিক ভারত। গুয়াহাটিতে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বিরাট কোহলি সেঞ্চুরিতে রানের পাহাড় গড়ে স্বাগতিকরা। রান তাড়ায় লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকাও হাঁকিয়েছেন শতক। তবে, হয়নি শেষ রক্ষে। বড় হার নিয়েই ছাড়তে হয়েছে মাঠ।

গুয়াহাটিতে এদিন আগে ব্যাট করে বিরাট কোহলির রেকর্ড গড়া শতকে ৩৭৩ রানের বিরাট সংগ্রহ পায় ভারত। লক্ষ্য তাড়া ওপেনার প্রাথুম নিশাঙ্কা আশা জাগালেও পায়নি কারো সঙ্গ। শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়া লঙ্কান অধিনায়ক শতক হাঁকিয়ে দলকে বড় হারের হাত থেকে করে রক্ষা। শানাকার ১০৮ রানের সুবাদেই শ্রীলঙ্কা থামে ৩০৬ রানে।

 এদিন টস জিতে ব্যাট করতে নামা ভারতকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার শুভমান গিল ও অধিনায়ক রোহিত শর্মা। উদ্বোধনী জুটিতে দু'জন গড়েন অবিচ্ছিন্ন শতরানের জোট। হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন দু'জনই। শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাট করতে থাকা গিল ফিরলে ভাঙে ১৪৩ রানের উদ্বোধনী জোট।

ফেরার আগে গিল খেলেন ১১ চারে ৬০ বলে ৭০ রানের ইনিংস। এরপর বিরাট কোহলিকে নিয়ে দলকে বড় সংগ্রহের পথে রাখেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। শুরু থেকেই দারুণ ব্যাট করতে থাকা এই ভারতীয় ওপেনার পেয়ে যেতে পারতেন বছরে নিজের প্রথম শতকটাও। তবে, মাত্র ১৭ রানের জন্য করেন সেই সুযোগ মিস।

মাধুশাঙ্কার শিকার হয়ে ফেরার আগে খেলেন ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৮ বলে ৮৩ রানের ইনিংস। এরপর নেমেই দ্রুত রান তুলতে থাকেন শ্রেয়াস আইয়ার। অন্যপ্রান্তে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন বিরাট কোহলি। ২৪ বলে ২৮ রানে ফিরেন আইয়ার। আইয়ার ফিরলেও থেমে থাকেনি ভারতের রানের চাকা।

রাহুলকে নিয়ে বিরাট কোহলি দলকে রাখেন রান পাহাড়ের দিকে৷ দু'জন মিলে গড়েন অবিচ্ছিন্ন পঞ্চাশোর্ধ রানের জোট। ২৯ বলে ৩৯ রান করে রাহুল ফিরলে ভাঙে এই জুটি। এরপর রীতিমতো ঝড় তোলেন কোহলি। তাতেই রান পাহাড়ে চড়ে ভারত।

ইনিংসের ৪৭তম ওভারে রাজিথার বলে সিঙ্গেল নিয়ে কোহলি পূর্ণ করেন ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের ৪৫ নম্বর, সবমিলিয়ে ৭৩ নম্বর শতকের৷ সেই সাথে কিংবদন্তি শচিন টেন্ডুলকরের রেকর্ডেও বসিয়েছেন ভাগ। ১৬৪ ম্যাচে ঘরের মাঠে ২০ ওয়ানডে সেঞ্চুরি রয়েছে শচিনের নামের পাশে। যেখানে ১০২ ম্যাচে কোহলি স্পর্শ করলেন সেই রেকর্ডটি।

শেষ পর্যন্ত কোহলি ঝড় থামে ইনিংসের ৪৯তম ওভারে। ফেরার আগে ১২ চার ও ১ ছক্কায় খেলেন ৮৭ বলে ১১৩ রানের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ভারত সংগ্রহ করে ৩৭৩ রান।

ভারতের পাহাড়সম টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ওপেনার আভিষ্কা ফার্নান্দো ও কুশল মেন্ডিসের উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। দু'জনকেই ফেরান মোহাম্মদ সিরাজ। এরপর চারিত্রা আসালাঙ্কার সঙ্গে দলের হাল ধরেন প্রাথুম নিশাঙ্কা। তবে, এই জুটি বড় হওয়ার আগেই ২৩ রান করা আসালাঙ্কার উইকেট তুলে নেন উমরান মালিক। 

চর্তুথ উইকেট জুটিতে শক্ত প্রতিরোধ গড়েন নিশাঙ্কা ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। গড়েন অবিচ্ছিন্ন পঞ্চাশোর্ধ রানের জোট। ভারতীয় বোলারদের শাসন করেন ধনাঞ্জয়া দ্রুতই তুলতে থাকেন রান। ৯ চারে ৪০ বলে ৪৭ করা ধনাঞ্জয়াকে ফেরান মোহাম্মদ শামি। বাকিরা উইকেটে থিতু হতে না পারলেও, ৫০তম ওয়ানডে খেলতে নামা ওপেনার প্রাথুম নিশাঙ্কা তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। 

১১ চারে ৭২ রান করা এই ওপেনার ফিরেন উমরান মালিকের শিকার হয়ে। এরপর ম্যাচের বাকি সময়টায় দাপট দেখান লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। তাতেই হারের ব্যবধান কমতে থাকে ভারতের। ইনিংসের শেষ ওভারে গিয়ে তুলে নেন দুর্দান্ত শতকও। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কা থামে ৩০৬ রান করে।

১২ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৮ বলে ১০৮ রান করে অপরাজিত থাকেন দাসুন শানাকা। ভারতের পক্ষে উমরান মালিকের শিকার ৩টি উইকেট। মোহাম্মদ সিরাজ নেন ২টি উইকেট। 

-নট আউট/টিএ